ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সাভারের চারটি ওয়্যারহাউস সিলগালা করেছে হাইকোর্টের গঠন করে দেওয়া পরিচালনা কমিটি। প্রতিষ্ঠানটির দায় ও সম্পদ পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে আজ সোমবার দুপুরে সাভারের আমিনবাজারে দুটি ও বলিয়াপুরে দুটি ভাড়া করা ওয়্যারহাউস পরিদর্শন করেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও গঠিত পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এইচএম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে কমিটির পাঁচ সদস্য। পরে সিলগালা করা হয় ওয়্যারহাউসগুলো।
এ সময় ইভ্যালির পরিচালনা বোর্ডের এমডি অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন বলেন, ‘ইভ্যালি থেকে যাঁরা পণ্য পেয়েছেন বা পাননি তাঁদের ভাউচার, বিল, পেমেন্ট স্লিপগুলো যেন তাঁরা ভালোভাবে সংরক্ষণ করেন। এগুলোর মূল কাগজপত্র সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। আমি রিপোর্ট পেয়েছি, কুরিয়ার সার্ভিস গ্রাহকদের এসএমএস দিয়েছে যে, আমরা আপনার পণ্য পিক করেছি। অতি দ্রুত ডেলিভারি করা হবে। কিন্তু গ্রাহক পণ্য পাননি। সেসব এসএমএস সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।’
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বোর্ডের চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আজকে ওয়্যারহাউস পরিদর্শনে এসেছি। কিন্তু ইভ্যালির সম্পদের কোনো হিসেব করা হয়নি। কারণ, সেটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। পরবর্তী সময়ে অডিট রিপোর্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে। আমরা অডিট করব, ইনভেনটরি করব কী কী আছে। আজকে ইনভেনটরি করিনি।’
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী ১১ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে সব নথি দাখিল করেন জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর এক গ্রাহকের করা রিটের শুনানি নিয়ে ইভ্যালির স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। ১৮ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে ইভ্যালি পরিচালনা করার আদেশ দেন।
আজ পরিদর্শন শেষে ইভ্যালির পরিচালনা কমিটির প্রধান বলেন, ‘ওয়্যারহাউসে বেশ কিছু টেলিভিশন, কোমল পানীয়সহ ইলেকট্রনিকস মালামাল রয়েছে। কিন্তু আমাদের জানানো হয়েছে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর এই ওয়্যারহাউস থেকে মূল্যবান অনেক মালামাল সরিয়ে ফেলা হয়।’
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির কোথায় কী সম্পদ রয়েছে এবং সেগুলো কী অবস্থায় রয়েছে, সেসব সম্পদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির দায়দেনা কতটুকু পরিশোধ করা যাবে ইত্যাদি বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছে বর্তমান কমিটি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শামীম আজিজ প্রমুখ।
নিউজ গার্ডিয়ান/ ফরা/