চাঁদনী আক্তার
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর মাস। ৩০ লক্ষ শহীদের ত্যাগ এবং রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামক লাল সবুজের দেশ।
সেই থেকে প্রত্যেক বছরের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয় বিজয় দিবস।১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
বিজয় মানেই আনন্দ,বিজয় মানেই হাসি, উচ্ছাস। বিজয় দিবসে সারা দেশ লাল সবুজ রঙে রঙিন হয়ে যায়। সাধারনত এই দিনটিতে দেশের নারী-পুরুষ সবুজ পাঞ্জাবি, লাল শাড়ি পড়ে আনন্দের সহিত দিবসটি উদযাপন করে।একজন সুনাগরিক হিসেবে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা করে এবং শহীদদের স্মরণ করে স্মৃতি স্তম্ভে ফুল নিবেদন করে থাকে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি চাঁদনী আক্তার শিক্ষার্থীদের ভাবনা নিয়ে জানাচ্ছেন।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া কামাল বলেন,বিজয় মানেই কোনো কিছুতে জয় লাভ করা! আর বহির্শক্তির হাত থেকে মুক্ত হয়ে কোনো দেশ যে দিনে স্বাধীনতা লাভ করে সেটিই তার বিজয় দিবস। প্রতিটি জাতির জীবনে বিজয় দিবস এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল দিন। তেমনি ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতিসত্তার আত্মমর্যাদা,বীরত্ব এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক বহনকারী একটি দিন। এই দিনটি বাংলাদেশের বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করেছে এ পূর্ণাঙ্গ বিজয়। এই দিনে বাঙালিরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে তাদেরকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল। ৩০ লক্ষ শহীদের জীবন উৎসর্গ, অগণিত মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ৭১-এর এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ। তাই ডিসেম্বরের বিজয়ের এই দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বাপেক্ষা স্মরণীয়, আনন্দময় এবং গৌরবের দিন।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তানহা বিনতে আমান বলেন,১৬ ডিসেম্বর, অন্য সব দিন থেকে এই দিনটা আলাদা। এই দিনেই প্রথমবারের মত আমরা স্বাধীনতার স্বাদ নিয়েছি। ২৪ বছর অপেক্ষা করার পর সেই স্বাধীনতা শব্দটি শুনতে পেরেছি। চিৎকার করে বলতে পেরেছি “আমরা স্বাধীন, আমরা মুক্ত “। স্বাধীনতার এই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে এই চেতনা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাক বহুদূর।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী শতাব্দী ভৌমিক বলেন, বিজয় আমাদের জীবনে যেমন বাংলার মানুষের অবদানের সুখের ভাবনা আনে, ঠিক তেমনি বয়ে আনে তাদের হারানোর সেই বিষাদের স্মৃতি। বিজয়ের এই দিনে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তাদের এই অবদানকে বিনম্র চিত্তে সম্মান জানাই। আর তখনই যেনো সবার মনে বেজে উঠে একটাই কথা, ” আমরা ধন্য এই দিনে, স্বাধীনতা তোমায় পেয়ে।” নবীনরা জেগে উঠো! স্বাধীনতা পাওয়ার থেকে তা ধরে রাখা কষ্টের। স্বাধীনতা রক্ষার মনোবল নিয়েই এগিয়ে যাক এই দেশ।