পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে মনোনিত প্রার্থীর বিরোধীতা করেও দলের কমিটিতে পদ চাওয়ায় সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করছে মৌডুবী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। আগামি ১২ মার্চ ৬ নং মৌডুবী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠন নিয়ে এ সংকটের আশঙ্কা তৃণমূল কর্মীদের। দীর্ঘদিন দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকা, শৃক্সখলা ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত, পূর্বে বিএনপি সমর্থন করা ব্যক্তিরা অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কমিটিতে পদ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও গুঞ্জন উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামি ১২ মার্চ ৬ নং মৌডুবী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এ সম্মেলন উপলক্ষে দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকা এবং দলের কর্মসূচীতে বিরোধীতা করা ব্যক্তিরাও গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে চেষ্টা করছেন। জেল-উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সুপারিশে বিভিন্ন পদে আসীন হতে চান তারা।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৬ নং মৌডুবী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রাসেল নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালান হাসান মাহমুদ শিপন সহ চারজন। দীর্ঘদিন দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও অর্থলেনদেনের মাধ্যমে কাউন্সিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান শিপন। দলীয় কর্মসূচীতে না থাকা, পূর্বে বিএনপির সাথে সংশ্লিষ্টতা এবং পারিবারিক ব্যবসার মাধ্যমে সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এ দুর্নীতি, ভ‚মিদস্যুতা সহ একাধিক দুর্নীতির প্রমাণ থাকায় দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন পেতে ব্যার্থ হন তিনি। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নিজ ভাই হাসান মাহমুদ শাকুরকে নৌকাবিরোধী প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। দলের একাধিক শীর্ষ নেতা নিষেধ করা সত্বেও তিনি সহ কয়েকজন বহিস্কৃত নেতা-কর্মী দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অনাস্থা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
অবশেষে নৌকাবিরোধী প্রার্থীর ভরাডুবী হয় এবং বিপুল ভোটে জয়ী হন আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদ হাসান রাসেল। নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়লাভ করলেও তাকে ঠিকমতো কাজ করতে দেয়া হবে না বলে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকী দেয় শিপন-শাকুর সহ নৌকাবিরোধী গ্রæপটি। তারই ধারাবাহিকতায় আগামি দলীয় কমিটিতে ওই গ্রæপের আধিপত্য বিস্তারর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের। এতে দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার সাথে সাথে অত্র এলাকায় আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা দলের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে যোগ্য নেতৃত্বকে বেছে নিতে চাই। দুর্নীতিগ্রস্ত ও দলের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের প্রতি সহানুভূতি দেখালে ভবিষ্যতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
লবিংয়ের মাধ্যমে বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং দলের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের পদ প্রত্যাশা করার বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন জানান, ‘দলের সুসময়ে পদের জন্য লোকের অভাব হয় না। কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত ও অনুপ্রবেশকারীকে দলে আশ্রয় দেয়া হবে না।’ এছাড়া দলের বিরুদ্ধে কাজ করা ব্যক্তিদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে দলের ভাবমুর্তি নষ্ট করার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।