বয়স ছুঁয়েছে আশির কোঠা। স্বামীকে হারিয়েছেন ১৯ বছর আগে। কিন্তু ফজরের আজান হলেই তিনি গুটি গুটি পায়ে হেঁটে চায়ের দোকানে এসে বসেন। নিজ হাতে চা বানিয়ে তুলে দেন চা প্রেমীদের হাতে।
মৌলভীবাজার পৌর শহরের বেড়ি লেকের পাশে দীর্ঘদিন ধরে চায়ের দোকান চালাচ্ছেন নূরজাহান বেগম। এই শেষ বয়সে এসে ৯ সদস্যের পরিবারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। নূরজাহান মৌলভীবাজার পৌর শহরের কাজিরগাঁও এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। তার বাপের বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর এলাকার। পরিবার নিয়ে শহরের কাজিরগাঁও তিনি এ ভাড়া বাসায় থাকেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, ছেলে পেশায় বাবুর্চি কিন্তু অসুস্থ থাকায় কাজ করতে পারে না। শহরের বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল সব কিছু আমার ছেলে একা পারছিলনা। তাই ছেলেকে পরিবার চালাতে কিছু সাহায্য করতেই এই চায়ের দোকান খুলেছি।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমার ছেলের বড় একটি অপারেশন হয়েছে। ছেলে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে এখন আমার পরিবারে ৯ সদস্য। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। শেষ বয়সে নিজের বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার কথা ছিল। সেই বয়সে চায়ের দোকান চালিয়ে পরিবারকে সাহায্য করতে হচ্ছে। পেটের দায়ে এসে দোকানে সময় দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই জায়গায় যে চায়ের দোকান দেই, পৌরসভা আমায় কিছু বলে না। তাদেরকে কোনো টাকা দিতে হয়না। মেয়র আসলে আমাকে সব সময় এখানে দেখেন কিন্তু কিছু বলেননি।
মৌলভীবাজার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফয়সল আহমদ বলেন, আপনার মাধ্যমে মহিলার কথা জানলাম। ওই বৃদ্ধ মহিলাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো।
কথা হয় স্থানীয় বেকারির কর্মচারি আবুল মনসুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৪/৫ মাস থেকে ওই মহিলার ওখানে বাটার, কেক, বনসহ যাবতীয় বেকারির পণ্য দিয়ে আসছি। তিনি প্রতিদিনের টাকা প্রতিদিন দিয়ে দেন। কোনো বাকি টাকা রাখেন না। লেনদেনে কোনো সমস্যা হয় না।
নিউজ গার্ডিয়ান/এমআই/