নাইমা জামান সুপ্তি
২০০৬ এ বাবার পাশে বসে খেলা দেখতে নিয়ে সোফায় ঘুমিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে আজকের এই ২০২২ এর আমি, যার বেড রুমে বেডের অপোজিটের ওয়ালে মেসির ছবি , যার ফোনের লক স্ক্রিনে মেসি, যার পাসওয়ার্ডে মেসির নাম থাকে, যার ওয়ারড্রপ ভর্তি মেসির টিশার্ট, যার ফোনের কাভারে মেসির ছবি!
ইউ মে থিংক আ’ম অবসেসড। আমারো মাঝে মাঝে এটাই মনে হয়।
হয় তো বাড়াবাড়ি হচ্ছে। একটু বেশি অবসেশন কাজ করতেছে হয় তো। কিন্তু পর মুহুর্তেই আবার মনে হয় অবসেশন বললে আসলে ইনজাস্টিস হবে। এটা মুগ্ধতা , এমন এক জাদুর মুগ্ধতা যা ‘১০ থেকে ‘২২ এ এসেও কাটে নি। আর কাটা সম্ভবও না।
নিজেকে লাকি বলবো আসলে যে আমি বার্সার প্রাইম টাইমে ফুটবল খেলা দেখা বুঝতে শুরু করেছি। ২০১১/’১২’/১৩/’১৪ এর বার্সা কেমন ছিল আমরা সবাই জানি!
জাভি, ইনিয়েস্তা, ভিয়া, পুয়োল থেকে শুরু করে অমানবীয় এমএসএন এ আমি মুগ্ধ হয়েছি।
এল ক্লাসিকোতে রাত জেগে রিয়াল-বার্সার দ্বৈরথ থেকে শুরু করে বার্সার হেক্সা জয়, একেকটা স্বপ্ন লাগতো!
বার্সার জয়ে যখন উড়তাম ঠিক তখনই শুনতে হতো মেসি জাতীয় দলের হয়ে ভালো খেলে না।
জাভি, ইনিয়েস্তা ছাড়া মেসি কিছু না। আর্জেন্টিনাতে জাভি, ইনিয়েস্তা নেই তাই মেসি ভালো খেলে না। ডিফেন্ড করতাম, ঝগড়া করতাম।
কতো ভালো ভালো সম্পর্ক/ বন্ধুত্ব এই ছোট্ট আমি এক নিমিষে বিসর্জন দিতে রাজি হতাম ,শুধু এই কথা বুঝাতে চেয়ে যে মেসি জাভি, ইনিয়েস্তার উপর নিভর্র করে না! নি:সন্দেহে জাভি, ইনিয়েস্তা লিজেন্ড কিন্তু জাদুকর তার লাঠি ছাড়াও জাদুকরই থাকবে!
‘১০ এ বাথরুম লক করে অঝোরে কেঁদে আসা আমি কিংবা ‘১৪ তে এসে সেহরির প্লেট হাতে থাকা সত্ত্বেও সেহরি করতে না পারা আমি জানি এতো এতো দূরে বসে থাকা একটা মানুষ যে কিনা কোনো দিন জানবেও না আমি এক্সিস্ট করি, সে আসলে আমার মতো কোটি মানুষের জন্য ঠিক কতো টা ম্যাটার করে।
আমি বরাবরই নিজেকে ইমোশনাললি স্ট্রং হিসেবে ধরে নেই। ইমোশন একান্তই নিজের সাথে ভাগাভাগি করার জিনিস বলেই মনে হয়। ফ্রেন্ডসরা যখন জিজ্ঞেস করে ফাইনাল একসাথে ক্যাম্পাসে বসে দেখবো কিনা, আমি বলি না বাসায় দেখবো। কারণ আমি জানি, গত ১২ বছরের আমার মোনাজাতের প্রার্থনা যখন অপূর্ণ থাকবে , ৫’৭” ঐ ছোট্ট জাদুকর যখন তার জীবনের শেষ ওয়ার্ল্ড কাপে আবার অঝোরে কাঁদবে , আমি যতো স্ট্রংই ভাবি নিজেকে আমার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হবে না।
বার্সার খেলা/ আর্জেন্টিনার খেলা সামনেও দেখবো। কিন্তু একটা মানুষ ৪/৫ টা প্লেয়ারকে কাটিয়ে বল নিয়ে দৌঁড় দিলে আর আমার হাত পা ঠান্ডা হবে না। ফুটবল কে ভালোবাসবো কিন্তু অবসেসড হয়ে কারও পক্ষ নিয়ে ঝগড়া করবো না।
কাগজে কলমে ফ্রান্স ফেভারিট, বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু ঐযে এই মানুষ টার উপর গত ১২ বছরের বিশ্বাস এইবারও কানের কাছে গুনগুন করে বলে শেষ বারের মতো চোখের জলটুকুন নাহয় খুশিতে পড়ুক!
বাকিটা বিধাতার উপর ছেড়ে দাও, গল্পের শেষ টা সে তার ছন্দে লিখুক!
Dear Leo,
Cheers to all those magical moments we’ve witnessed, cheers to all those beautiful evenings we’ve spent watching you lifting numerous trophies, cheers to all those days when we didn’t want to face the world after your defeat, cheers to all those ridiculous decisions when we stupidly decided not to watch football anymore after seeing you crying like a baby or cheers to all those sleepless nights I’ve spent watching your match highlights after getting my heartbroken.
CHEERS TO ONE LAST DANCE OF MY GOAT IN HIS LAST WORLD CUP.
নিউজ_গার্ডিয়ান/এমআই/